Notification texts go here Contact Us Buy Now!

আসহাবে বদরের জীবনকথা

Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated


 

আসহাবে বদরের জীবনকথা

লেখক : মাওলানা সুলাইমান সালমান মানসুরপুরি, মুফতি মুহাম্মাদ আসগর কাসেমি

প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ইসলাম

বিষয় : ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সাহাবীদের জীবনী, ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য

অনুবাদ: মাওলানা সিরাজুল ইসলাম 

পৃষ্ঠা: ৬৭২


মদিনায় হিজরতের পর মদিনাবাসীর সহযােগিতায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবিগণ মদিনায় হিজরত করার পর থেকে ইসলাম ও কাফেরশক্তির মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। প্রথম দিকে ছােট ছােট কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। কুরাইশদের কোনাে কোনাে দল মদিনার আশাপাশে টহল দিতে শুরু করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ধাওয়া করার জন্য ছােট ছােট অভিযান পরিচালনা করেন। সারিয়ায়ে হামযা, সারিয়ায়ে উবায়দা ইবনে হারেস, সারিয়ায়ে সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস, গাযওয়ায়ে আবওয়া, গাযওয়ায়ে বুয়াত, গাযওয়ায়ে আশিরা এজাতীয় প্রেক্ষাপটেই সংঘটিত হয়েছিলাে । মােটকথা কুরাইশরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়েকেরামের হিজরতের পরপরই মদিনায় আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে । যেমন তারা আবদুল্লাহ ইবনে উবাইকে চিঠি লেখে, হয় তােমরা মুহাম্মদকে হত্যা করাে, অন্যথায় আমরা তার সঙ্গে তােমাদেরও ফয়সালা করবাে। গাযওয়ায়ে আশিরা থেকে ফিরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায় দশদিন মদিনায় অবস্থান করেন। ইতােমধ্যে কুরাইশ-সরদার কুরয ইবনে জাবের ফাহরি মদিনার আশপাশের চারণভূমি পর্যন্ত এসে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় । লুটপাট করে। রাতে অতর্কিত আক্রমণ করে। অনেকেরই উট-বকরি চুরি করে নিয়ে যায় । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সংবাদ শুনে হযরত যায়েদ ইবনে হারেসাকে মদিনার আমির নিযুক্ত করে বদরের নিকটবর্তী এলাকা সাফওয়ান পর্যন্ত তাদের ধাওয়া করেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে পৌছার আগেই কুরয ইবনে জাবের পালিয়ে যায় । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় ফিরে আসেন। সাফওয়ান বদরের নিকটবর্তী একটি জায়গার নাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরযকে ধাওয়া করে বদরপ্রান্তর পর্যন্ত গিয়েছিলেন । এজন্য এই যুদ্ধকে বদরের প্রথম যুদ্ধ বলা হয়। সাফওয়ানের যুদ্ধও বলা হয় । কুরয ইবনে জাবের পরবর্তীকালে মুসলমান হন।

ঐতিহাসিক বদরপ্রান্তর ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ হলাে বদরের যুদ্ধ । ইসলামের শান-শওকত, ও সম্মান-মর্যাদা এই যুদ্ধের মধ্যদিয়েই প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করে ।


আসহাবে বদরের জীবনকথা • ২৪ বদর একটি প্রান্তরের নাম। সেকালে প্রতিবছর একবার সেখানে মেলা বসত জায়গাটি আনুমানিক মদিনা থেকে ৮০ মাইল দূরে অবস্থিত। এখানে মেলা উদ্ভাবক ছিলেন বদর ইবনে ইয়াখলুদ ইবনে নজর ইবনে কেনানা অথবা বদন ইবনে হারেস। এজন্যই এই নামে জায়গটির নামকরণ করা হয়েছে। তবে কেউ কেউ বলেছেন, বদর একটি কূপের নাম। এই কূপের নামানুসারে এই প্রান্তরের নাম বদর হিসাবে প্রসিদ্ধ হয়ে যায়।

| সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী দিন বদরযুদ্ধে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে বাহ্যিক কোনাে সমর-সরঞ্জাম ছাড়াই কুফর। ও শিরকের মাথায় প্রচণ্ড এক আঘাত এসে পড়ে। তাতে কুফর ও শিরকের শিরদাঁড়া ভেঙে চুরমার হয়ে যায় । বদরপ্রান্তর আজও তার সাক্ষী হয়ে আছে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে এ দিনটিকে 36 । নামে অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী দিন। তা ছাড়া বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে রমযান মাসে। এই মাসও হক বাতিলের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী মাস । কারণ এ মাসে আল্লাহ তায়ালা কুরআন অবতীর্ণ করেছেন, যার অপর নাম ফুরকান। আল্লাহ তায়ালা এ মাসে কুরআন অবতীর্ণ করে হক-বাতিল ও হেদায়েত-ভ্রষ্টতার মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এই মাসে আল্লাহ তায়ালা রােযা ফরয করেছেন। যাতে তিনি তার প্রেমিক ও আশেক বান্দাদের পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তার সত্য প্রেমিক আর কে তার মিথ্যা প্রেমিক। কে তার খাটি আশেক আর কে তার মিথ্যা আশেক। যে তার সত্য প্রেমিক, যে তার খাটি আশেক সে তাে সুবহে সাদেক থেকে নিয়ে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালার ইশক-মহব্বতে তীব্র তাপদাহেও উপবাস থাকবে । কোনাে কিছু খাবে। না, পান করবে না। আর যে মিথ্যা আশেক সে তাে এত কষ্ট সহ্য করবে না । সে তার পেটের পূজায় লিপ্ত থাকবে। মােটকথা রমযান মাস খাটি-অখাঁটি, ভেজাল-নির্ভেজালের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী দিন।

যেভাবে শুরু রমযানের শুরুতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ পান আবু সুফিয়ান কুরাইশদের বাণিজ্যিক কাফেলা নিয়ে শাম থেকে মক্কার উদ্দেশে যাত্রা। করেছে। পুরাে কাফেলাই ব্যবসায়িক পণ্য ও রসদসামগ্রীতে ভরপুর। রাসুলুল্লাহ

১. যারকানি : ১/৪০৬


 সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের সমবেত করে উক্ত কাফেলার গতিরােধ করার নির্দেশ দেন। তখন পর্যন্ত মক্কার পৌত্তলিকদের সঙ্গে মুসলিমদের যুদ্ধ হবে- তার ধারণাও কারাে ছিল না। এজন্য সাহাবায়েকেরাম যুদ্ধের কোনাে প্রস্তুতি ছাড়াই বের হয়ে পড়েন। আবু সুফিয়ানের আগে থেকেই পথে মুসলমান-কর্তৃক বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল । একারণে আবু সুফিয়ান যখন হেজাযের কাছাকাছি এসে পৌঁছে। তখন প্রত্যেক পথিক ও মুসাফিরকেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি। ওয়াসাল্লামের অবস্থাদি জিজ্ঞাসা করে। কতিপয় মুসাফিরের মাধ্যমে সে অবগত হয়, মুহাম্মদ তার সঙ্গীদের তােমার কাফেলার দিকে আসার নির্দেশ দিয়েছে। আবু সুফিয়ান তখনই যামযাম গিফারিকে পারিশ্রমিক দিয়ে এই বলে মক্কায় পাঠায়, তুমি গিয়ে কুরাইশদের বলবে, তারা যেন দ্রুত তাদের কাফেলার খোঁজখবর নেয় এবং নিজেদের সম্পদ রক্ষা করার চেষ্টা করে। কারণ মুহাম্মদ তার সঙ্গীদের নিয়ে এই কাফেলার পিছু ধাওয়া করার জন্য রওনা দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কুরাইশ-কাফেলার পিছু ধাওয়া করার লক্ষ্যেই বের হয়েছেন তা হযরত কাব ইবনে মালেকের একটি উক্তি থেকে পরিষ্কারভাবে বুঝে আসে । হযরত কাব ইবনে মালেক রা. বলেন,

تم التخلف عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في غزوة غزاها الا في غزوة تبوك غير أني تخلفت عن غزوة بدر ولم يعاقب احد تخلف عنها انما خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم يريد عير قريش حتى جمع الله بينهم و بين عدوهم على غير ميعاد

আমি এমন কোনাে যুদ্ধে পেছনে থাকিনি, যে যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অংশগ্রহণ করেছেন। তবে তাবুকের যুদ্ধ এর ব্যতিক্রম। তাবুকের যুদ্ধ ছাড়া বদরের যুদ্ধেও পেছনে থেকে গিয়েছিলাম। কিন্তু বদরের যুদ্ধে যারা পেছনে থেকে গিয়েছিল তাদের নিয়ে কোনাে ভৎসনা করা হয়নি। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু কুরাইশ-কাফেলা ধাওয়া করার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। ঘটনাক্রমে অনিচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের তাদের শত্রুদের মুখােমুখি করে দেন।

২. আলবিদায়া : ২/২৫৬। ৩. সহিহ বুখারি : বদরযুদ্ধ অধ্যায়




কারো হাতে অস্ত্র আছে, কেউ সম্পূর্ণ খালি হাতে, অধিকাংশের পায়ে জুতো নেই, নেই পর্যাপ্ত উট আর ঘোড়া। অপরদিকে শত্রু বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে হাজির। সংখ্যায় দ্বিগুণেরও বেশি দেখা যাচ্ছে। বিজয়ের ধ্বনি গেয়ে এগিয়ে আসছে দ্রুত বেগে রক্তপিপাসু দল। এমতাবস্থায় আপনি কী করতেন? আমরা কি পারতাম এমন যুদ্ধে স্থির দাঁড়িয়ে থাকতে, চোখের সামনে মৃত্যু দেখেও?সাহাবিগণ পেরেছিলেন, বদর যুদ্ধের সেই দিনে তাঁরা রচনা করেছিলেন ইসলামের এক নতুন ইতিহাস। আর তাই কুরআনের ভাষায় দিনটিকে বলা হয় يوم الفرقان অর্থাৎ সত্য-মিথ্যা পার্থক্যকারী দিন। এদিন পাঁচ হাজার ফেরেশতা এতে অংশগ্রহণ করেছিলেন, ফলে আসমানের ফেরেশতাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ ফেরেশতা হবার মর্যাদা তাঁরা পেয়েছিলেন। সেইসাথে যে ৩১৩ জন সাহাবীরা এতে অংশগ্রহণ করেছিল, তাঁরা হয়েছেন দুনিয়া-বাসীদের মাঝে সেরা।বদর যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের জীবনীতে রয়েছে মুসলিমদের জন্য মূল্যবান শিক্ষা, বিশেষ করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে যখন কিনা মুসলিমরা সবদিক থেকে কোণঠাসা। তাই মাকতাবাতুল ফুরকান নিয়ে এসেছে ৩১৩ জন বদরী সাহাবীদের জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে রচিত একটি অনবদ্য গ্রন্থ ‘আসহাবে বদরের জীবনকথা।’এতে বদর যুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে, সেই সাথে এতে অংশগ্রহণকারী ৩১৩ জন সাহাবীদের সংক্ষিপ্ত জীবনী আলোচিত হয়েছে অত্যন্ত সাবলীল ভাষায়।



Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.